রাতে ঘুমের মধ্যে স্ত্রী নাক ডাকেন, সেটা আর সহ্য হয় না স্বামীর। তাই সেই নাক ডাকার থেকে রেহাই পাবার জন্য এক অভিনব পন্থা অবলম্বন করলেন স্বামী।
স্ত্রীর নজর এড়িয়ে বাড়ি থেকে ৮০০ মিটার দূরে অবস্থিত মদের দোকানে যাওয়ার জন্য গোপন রাস্তা খুঁড়েছিলেন তিনি।
কোমরের সমস্যার জন্য বউ যেহেতু নিচু হতে পারেন না, তাই শোয়ার ঘরের খাটের তলা থেকে একটি সুড়ঙ্গ করেছিলেন তিনি। সুড়ঙ্গের অন্য প্রান্তটি ছিল মদের দোকানের পাশের এক শৌচালয়ের ভিতরে।
দীর্ঘ পনেরো বছর এই ভাবে চলার পরে অবশেষে ধরা পড়লেন স্বামী, তার নাম— পাটসি কে। ধরা পড়েও কোনও তাপ উত্তাপ নেই তাঁর। তিনি সোজাসুজি বলেছেন, তাঁর স্ত্রীর বিরক্তিকর নাক ডাকার হাত থেকে বাঁচার জন্য এবং রাত্রবেলায় মদ খাওয়ার জন্য তিনি এই পথ বেছে নিয়েছিলেন!
স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়লে তিনি চলে যেতেন সেখানে। ফিরে আসতেন ঘণ্টাখানেকের মধ্যে। পাটসি জানিয়েছেন, মদের দোকানের মালিকও তাঁর আসা-যাওয়া দেখে অবাক হতেন। তিনি বুঝতেই পারতেন না, কোন পথ দিয়ে হুট করে তিনি সেখানে আসেন। কোন পথ দিয়েই বা ফিরে যান।
১৯৯৪ সালে স্টিফেন কিংয়ের লেখা গল্পের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত শশাঙ্ক রিডেম্পশন সিনেমাটি দেখে তিনি এই রকম একটা কাজ করার অনুপ্রেরণা পান। সিনেমার প্রধান নায়ক যেমন জেলখানার মেঝে খুঁড়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন, তিনিও সে রকম কিছু চমক দেখাতে চেয়েছিলেন।
সুড়ঙ্গ খোঁড়ার জন্য ব্যবহার করেছিলেন কাঁটা চামচ, স্ক্রু ড্রাইভার, ছোট্ট ছেনি থেকে শুরু করে ড্রিল মেশিন। স্ত্রী যখন শপিং করার জন্য বাইরে যেতেন তখন বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে তিনি সেই সুড়ঙ্গ খুঁড়তেন। বহু বছরের চেষ্টার পর ২০০৯ সালে তাঁর সুড়ঙ্গ খোঁড়া শেষ হয়। এই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার জন্য তাঁকে রোড ম্যাপও জোগাড় করতে হয়েছিল।
তার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই রাত ১১টা নাগাদ ওই সুড়ঙ্গ দিয়েই ৮০০ মিটার দূরের মদের দোকানে তিনি চলে যেতেন এবং সেখানে গিয়ে মদ খেয়ে ঘন্টাখানেক পরেই আবার ফিরে আসতেন।
স্ত্রী তাঁর মুখ থেকে অ্যালকোহলের গন্ধ পেলেও ধরতে পারতেন না কখন, কোথায় গিয়ে তিনি মদ খেয়ে এলেন।
তবে সম্প্রতি ড্রেনের ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে ওই সুড়ঙ্গটির ফাটল ধরা পরে। সেই ফাটল অনুসরণ করেই পুরসভার কর্মীরা এসে হাজির হন পাটসির বাড়ি।
তবে হাতেনাতে ধরা পড়লেও পাটসি খুবই খুশি। কারণ, তিনি যেটা করতে চেয়েছিলেন, অন্তত এত দিন তো সেটা করতে পেরেছেন, সেটাই বা কম কী! আর তা ছাড়া তিনি জানতেনও, একদিন না একদিন তিনি ধরা পরবেনই। তাই তাঁর কোনও আফসোস নেই।