” তুই আমাদের এতটুকুও সুখ দিতে পারলি না। আমি আর তোর বাবা মুখে রক্ত তুলে পরিশ্রম করি যাতে তোর একটু উন্নতি হয়। খাতা-বই-মাস্টার কোনও কিছুর অভাব রাখিনি। তবু পাশের বাড়ির টুনির চেয়ে এবারও তুই পরীক্ষায় পাঁচ নম্বর কম পেলি। তুই কী আমাদের একবারও সুখী করবি না মা ।” দলা পাকিয়ে ওঠা দুঃখে প্রায় বন্ধ হয়ে আসা গলায় বছর চোদ্দর মেয়েকে কথাগুলো বললেন মা।
” আমি তো চেষ্টা করছি। উন্নতিও হচ্ছে। শুধু টুনির চেয়ে কম পেয়েছি বলে এমন করছ কেন ?” বিরক্ত মেয়ে উত্তর দিল।
” টুনির চেয়ে কম পাওয়াটা বড় কথা নয়। বড় কথা হল তোর এই ধারাবাহিকভাবে টুনির চেয়ে পিছিয়ে পড়াটা। ।” গম্ভীর গলায় বাবা বললেন।
” টুনি কী ভাবে পরীক্ষা দেয় জানো! ওর স্কার্ট-ব্লাউজ- মোজা সব জায়গায় কাগজ থাকে। পরীক্ষার সময় অন্ততঃ তিনবার বাথরুমে যায়। আর আমি তো নিজে লিখে ওর চেয়ে মাত্র পাঁচ কম পেয়েছি।” মেয়ে কারণ বোঝানোর চেষ্টা করল।
” সেটা কী রেজাল্টে লেখা আছে। কাল টুনির মা যখন গলা তুলে মেয়ের প্রশংসা করবে তখন আমি কী উত্তর দেব! হে ভগবান বলে দাও।” মা হাহাকার করে উঠলেন।
” বলবে তোমার মেয়ে সৎভাবে পরীক্ষা দিয়েছে।” মেয়ে দৃঢ় গলায় বলল।
” সৎ-অসৎ আমরা বুঝছি, লোকে তো নম্বর বুঝবে। তাদের কী বলব।” বাবা মেয়েকে প্রশ্ন করলেন।
আত্মবিশ্বাস গলায় ঢেলে মেয়ে বলল ” কাউকে কিচ্ছু বলতে হবে না, কোনও উত্তরও দিতে হবে না , আমাকে আমার কাজটা আমার মত করে চালিয়ে নিয়ে যেতে দাও, একদিন সময়ই আমাদের হয়ে সব উত্তর দিয়ে দেবে।”