–
–
কলেজের স্যার জিগান–তোমাকে যদি একদিনের ক্ষমতা দেয়া হয় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য তাহলে তুমি কি কি পদক্ষেপ নেবে?
–
একেক জন একেক কথা বললো।
নুরুল একটু কেশে কুশে বললো,আমি স্যার সবগুলো চিড়িয়াখানার বাঘ, সিংহ ,ভালুক ছেড়ে দিয়ে বুড়া মানুষ গুলারে খাওয়াইয়া ফেলব।
–
ক্লাশমেটরা জানতো, ওর মুখে এমন কথাই বের হবে
একদিন যে নুরুল এখানকার ছাত্র, এখন সে এখানেই চাকরিটা জুটিয়েছে।আর এটাকে কৃতিত্ব দেখিয়ে মাস্টার রুলের চাকরীটাকে একটু সামাজিক স্ট্যাটাস হিসেবে ব্যবহার করে এসেছে ।
কলেজের সুবাদে সে এখন পফেসার সাপ।
–
ছাত্র জীবনে বিচিত্র অভিজ্ঞতার সাক্ষী মোহনগঞ্জ জারিয়ার ট্রেন। এ এম কলেজের এক মেয়ের সাথে ভোরের ট্রেনে ওঠা।দুপুরে হোটেল খন্দকার, বিকেলে প্রচন্ড ভীড় উপেক্ষা করে ট্রেনে সিট দখল করা,এক ঠোংগা বাদাম ভাগাভাগি করে নেয়া, স্টুডিওতে ছবি তোলা আরো অনেক কিছুই সুঘটনার সুরতে।
হঠাৎই ডাক্তারী রিপোর্ট —–বান্ধবীর ইউরিন টেষ্ট- কুইক চেকে পজিটিভ ।দুটো লাল দাগ।
ওদের পরিবারের সদস্যদের হতাশ করলোনা নুরুল।
মাস্টার্স শেষ হবে হবে।ওরা নিঃশব্দে বিয়েটা সেরে ফেললেও নুরুলের বাপ মানলো না।
ঢালী হাজির শরীরটা আনফিট। এলাকায় নাম হলো বোম্বাইয়া হাজি।গণ্যমান্যরা মানলেন ।
ঢালী হাজি মেনে নিলো না।
তারপর যা হয়।বাংলা সিনেমার মতো ভালোবাসার জয়।তিনশো টাকার একটা বাসা নিয়েছে।
বৌয়ের জন্মদিন করেছে।রিকশায় চড়ে সারা বেলা পার করে।
জন্মদিনের কেক কেটেছে কুড়াল দিয়ে ।
কেক খেয়ে কারো কারো লুজ মোশনেরও খবর শোনা গেছে।কারন কেকের ওপরে ক্রিমে লেখা ফুলগুলো মুখে যাবার পর সারা মুখ গহবরে রঙের কারখানা হয়ে গেছে ।
একটু ব্যতিক্রম কিছু করা আর কি।
বৌয়ের চাকরিটা আগে হয়ে গেছে উপজেলায়।একজন ঢাউস অফিসারের পি এ।
মুশকিল হলো মাঝে মধ্যেই বসের সাথে ট্যুর, লংড্রাইভ,শপিং টপিং,পিকনিকে নুরুল নট এলাও।কখনো ফিরতে ফিরতে রাত পার ।ভালোই কাটে বৌয়ের।
তারপরও চাকরির কচকচে নোটের ঘ্রাণে নাকের ছিদ্র পুলকিত হয়।
অবশেষে কলেজের খন্ডকালীন কাজটাকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করে ।
আর সবাই যখন পফেসার সাপ বলে ডাক দেয় তখন টাইয়ের নট ধরে শরীরে মাঞ্জা মারে।বডি স্প্রে দিয়ে রাস্তা ঘাটের মানুষের মনটাকে অস্থির করে রাখে।
ডিগ্রি ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রী লুনার প্রশ্নটাও খোঁচায়—-
স্যার ,আপনি জেনস বডি স্প্রে পান নাই?লেডিস স্প্রে তো জেনসরা দেয় না।
বৌকে বলে—সত্যি কথা কওতো বলি।আমার গায়ে নাকি লেডিস লেডিস গন্ধ?
কে বলছে?
না–মানে আমার এক স্টুডেন্ট —-
–
সবচেয়ে আলোড়িত হলো নুরুল যেদিন জিলেট রেজার দিয়ে নিজের বুকের লোমগুলো চেঁছে ফেললো।
এবং বৌয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,কাজটা কেমন হলো?
কোন কাজটা?
ফারজানা বলেছে,আমার বুকের লোমগুলোর সাদা রং ওকে মন খারাপ করে দেয়।তা –ই—
বেশ করেছেন পফেসার সাপ।তা ফারজানা টাকে একদিন বাসায় দাওয়াত দিয়ে এনো তো।
কেন কেন প্রিয়তমা?
ওকে দেখার খুবই ইচ্ছে করছে।
–
–