–
–
মহাজাতি সদনে কলকাতা হকার্স কমিটির কনভেনশন কভার করতে এসেছি। সকাল দশটায় হবার কথা। কিন্তু কর্মকর্তারা ছাড়া বিশেষ কেউ আসে নি এখনও। কিছু হতদরিদ্র, ভিখারিও হতে পারে, গেটের সামনে বসে। যদি কিছু মেলে……… আজ আর কী মিলবে? পাঁউরুটি আর কলা?
মাইকে বারবার ঘোষণা – যারা এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করছেন তাদের অনুরোধ করছি, আপনারা নির্দিষ্ট জায়গায় এসে বসুন, এখনই আমাদের সভা শুরু হবে। হুম, শুরু হতে হতে এগারোটা বাজল। বড়জোর একশো লোক!
অপারেশন সানসাইনের নেমে আসা খাঁড়া রুখতে সমিতি কী কী আন্দোলন করেছে তার সবিস্তার বর্ণনা গলার শিরা ফুলিয়ে কনভেনর জানালেন। নোট করছি আর আমার হাসি পাচ্ছে। জনসমর্থন বাড়লে বা কমলে নেতাদের গলা এমন চড়া হয়। এখানে পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি সেটা কমছে, চড়চড় করে কমছে। যেমন হয় আরকি, সরকার অনুগামী সব ক’টা সংগঠনের যা হাল, এও তার ব্যতিক্রম নয়। সরকারের কাজের প্রভাব সরাসরি এই সমিতিগুলোর উপর পড়ছে। সংগ্রাম করে কী পেলাম, এই হিসাব নিকেশে মানুষ চুপচাপ হয়ে গেছে। আগের মতো সেই উদ্দীপনা আর নেই।
আগে থেকে ঠিক করে রাখা প্যানেল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাশ হয়ে গেল। এবার খাওয়া দাওয়া, তারপর মিছিল, মিছিল করে ব্রিগেড।
এলাহি খাওয়া – মাটন বিরিয়ানি সঙ্গে চাটনি, সন্দেশ, আইসক্রীম। জ্বালাময়ী সংগ্রামী ভাষণ বলা এবং শোনার পরপরই এসব খেতে হয়। ইনকিলাব জিন্দাবাদ, বদল এই কাল হলো বলে। তা যা পারে হোক গে, অনেকদিন এমন ভাল খাবার খেতে পাই নি। তার ওপর সমমনা রিপোর্টার বলে বিশেষ যত্ন আত্তি। হুম, আবার কবে খেতে পাব কে জানে!
আমিও মিছিলে পা মেলালাম। আমি কি সত্যিই সমমনা? হুম, অন্ততঃ যতক্ষণ পেটে ওরা থাকছে ততক্ষণ তো বটে! পেটে খেলে তবে না গলার স্বর বের হয়! চল ব্রিগেড, সেখানে আবার অন্য ইতিহাস।