–
—
বছর 26 আগে এক সন্ধ্যায় জন্মগ্রহণ করেছিল মেয়েটা। নামটা ঠিক জানা নেই তবু তারই গল্প আজ বলবো, বাপ মার কোলে আলো করে সেদিন এসেছিল সে। সময় যেতে যেতে আধো আধো কথা কিছু বুলি , মা-বাবার মনটা সারাক্ষণ উচাটন করে রাখত সে । ছোট্ট মিষ্টি মেয়েটা আস্তে আস্তে বড় হয়ে হাঁটতে শিখে ,সারা বাড়ীটা যেন সারাক্ষণ দাপিয়ে বেড়াতে। প্রথম কথা বলা শিখেছিল মা।
–
কেজি স্কুল থেকে হাই স্কুল সবেতেই সে ছিল অন্যতম ছাত্রীদের মধ্যে একজন। একরাশ স্বপ্ন সারাক্ষণ সে দেখে চলত । স্বপ্নগুলো বাস্তব করতে এসেছিল মরিয়া। আর এই স্বপ্নগুলোকে দেখতে দেখতেই ছোট থেকে বছর পার করতে করতে আজ বড় হয়ে গিয়েছে সেই মেয়েটা। শিখেছি অনেক কিছুই। ছোট থেকেই মনটা নিজের থেকে শক্ত করেছে আর পাঁচটা মেয়ের মতোন সে অল্পতে ভেঙে পড়ে না। আশ্বিনের এক গভীর রাতে হারিয়েছে প্রথম শব্দ শেখা সেই মা টাকে।
–
তবুও সে সোজা হয়ে চলতে শিখেছে, শিখেছে কষ্টকে বুকের পাশে রেখে নতুনভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। সময় যেতে যেতে আজ তার বিয়ে, মা নেই তার কাছে রয়েছে কেবল বাবা, দায়িত্ব ও কর্তব্য সমস্ত কিছু মাথার উপর দায়ভার নিয়ে আজ সে বসেছে বিয়ের পিঁড়িতে। বাবার মনটাও কেবল অসহায় কিংবা নিরুপায়। বাস্তবতা মেনে নিতে হবে একদিন সব মেয়েরই বাপের ঘর ছেড়ে স্বামীর ঘর কে আপন করে নিতে হবে। তার বাবাও আজকে ভারাক্রান্ত কিন্তু সমস্ত কিছুতে এগিয়ে গেছে মেয়ের কথা ভেবে।
–
মেয়েও নিজেকে সবার থেকে শক্ত করে রেখে কান্নাটাকে বুকের মধ্যে চেপে রেখে সমস্ত কিছু দেখে যাচ্ছে এবং মানিয়ে নিয়ে চলার চেষ্টা করছে। কন্যা বিদায়ের সময় ও মেয়ের চোখে জল না দেখে কেউ কেউ হয়তো মনে ভেবেছে মেয়েটার মধ্যে কোনো আবেগ-অনুভূতি হয়ত নেই। কিন্তু মেয়েটা মনে মনে ভেবেছে আমি যদি ভেঙ্গে পড়ি অসহায় বাবা টাও আজকে হয়তো প্রচন্ড পরিমানে ভেঙে পড়তে পারে। কারণ তার সংসার বলতে সেই বাবা একাই। তাই আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী যে যাই ভাবুক না কেন সে নিজেকে শক্ত করে এগিয়ে গেছে তার নতুন গন্তব্যের দিকে।
–
কিন্তু সবাইকে বলার কেউ রইল না, কাল রাত্রের রাতে একাকী ঘরে মেয়েটার চোখের জল ফেলে ভিজেছে তার বালিশ প্রকাশ করেছে তারা আর্তনাদ, প্রকাশ করেছে সমস্ত কষ্ট, সবাই হয়তো সকলের সামনে অঝোরে কেঁদে প্রকাশ করতে পারে না আর্তনাদ, কিছু কিছু ব্যতিক্রমী থেকেই যায় সেই মেয়েটার মতন।
–
–