–
—
বাবা যতীন দাস ছিলেন এক সময়ের জমিদার। কিন্তু তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করায় দুলালের জীবনে নেমে আসে দুঃখ আর হতাশা। বঞ্চিত হন বাবার সম্পত্তি থেকে।
এর পর থেকেই ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন দুলাল। সেই দুলাল দাস কয়েক দিন আগেই পার করে এসেছেন জীবনের ৭২টি বছর। খুব স্বাভাবিক ভাবেই চেহারায় পড়েছে বার্ধক্যের ছাপ।
গত ১৮ বছর ধরে এ ভাবেই ভ্যান চালানোর ফাঁকে ফাঁকে নিজের ছেলেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেওয়ার জন্য যখন যেখানে নির্মীয়মান বাড়ি পেয়েছেন, সেখান থেকে কুড়িয়ে নিয়েছেন একটা-দুটো ইট।
সেই কুড়িয়ে আনা ইটের সঙ্গে আরও কিছু ইট কিনে অবশেষে তিন ছেলের জন্য তিনি বানালেন তিন-তিনটি বাড়ি।
এই দুলাল দাসের বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউপির শারশা গ্রামে। তার বড় ছেলের নাম মিত্র দাস, মেজো ছেলের নাম গোস্ত দাস এবং ছোট ছেলের নাম মিলন দাস।
তাঁরা সবাই বিবাহিত। দুলাল দাস বলেন, ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছি। তখনই কপাল পোড়ে আমাদের তিন ভাই ও পাঁচ বোনের। বঞ্চিত হই বাবার সম্পত্তি থেকে। লেখাপড়া করতে পারিনি। ছোট বেলা থেকেই ভ্যান চালিয়ে আর দিনমজুরি করে সংসার চালিয়েছি।
১৮ বছর আগে আমার স্ত্রী মারা যান। কিন্তু তিন ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি আর বিয়ে থা করিনি। অভাবের সংসারে ছেলেদেরও সে ভাবে লেখাপড়া করাতে পারিনি। তখনই ঠিক করি, আর কিছু না পারি ছেলেদের জন্য অন্তত মাথা গোঁজার ঠাঁই করে যাব।
সেই থেকেই ১৮ বছর ধরে বিভিন্ন জায়গা থেকে ইট কুড়িয়েছি। একই সঙ্গে প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে যে টাকা পেতাম, তার থেকে কিছু টাকা বাঁচিয়ে ৩০-৪০টি করে ইট কিনতাম। সেই সব ইট দিয়েই ছেলেদের জন্য তিনটি বাড়ি বানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বাড়িতে আসা-যাওয়ার ২৫ ফুট রাস্তা করার জন্য এরই মধ্যে ইট, খোয়া, বালি ও সিমেন্ট এনে রেখেছি। এ কাজে তিন ছেলেও আমাকে সমান তালে সাহায্য করছে।
–
–