==================================================
কিছু দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ডস ন্যাশনাল পার্কে শুকিয়ে যাওয়া এক নদীখাত থেকে ১৩ হাজার বছর আগের আদিম মানুষের জীবাশ্মে পরিণত হয়ে যাওয়া পায়ের ছাপ উদ্ধার হয়েছে।
অনেকগুলো পায়ের ছাপের জীবাশ্ম পেয়েছেন নৃতত্ত্ববিদরা। তবে তাঁরা জানাচ্ছেন, সব ক’টি পায়ের ছাপই পরস্পরের সঙ্গে মিলে গেছে এবং পরীক্ষা করে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, ওই সব জীবাশ্মের মধ্যে রয়েছে পূর্ণবয়স্ক এক পুরুষ, প্রাপ্তবয়স্কা এক নারী আর এক শিশুর পদচিহ্ন।
নৃতত্ত্ববিদরা বলছেন, তাঁদের পা ফেলার চিহ্ন দেখে বোঝা যাচ্ছে, ওই মানুষগুলো খুব তাড়াহুড়ের মধ্যে ছিলেন।
কী করে জানলেন বিজ্ঞানীরা? তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, আদিম ওই পুরুষ এবং নারীর প্রতি সেকেন্ডে পদক্ষেপের গতি ছিল ১.৭ মিটার।
ধীরে-সুস্থে হাঁটলে যা হওয়ার কথা প্রতি সেকেন্ডে ১.২ মিটার; খুব বেশি হলে ১.৫ মিটার।
নৃতত্ত্ববিদরা আরও জানান, এই দম্পতির পায়ের ছাপের মাঝে আচমকাই এক কোলের শিশুর পায়ের ছাপও দেখা গিয়েছে। এ থেকে তাঁদের অনুমান, হয়তো মা ক্লান্ত হয়ে শিশুটিকে কিছুক্ষণের জন্য কোল থেকে নামিয়েছিলেন!
নৃতত্ত্ববিদদের দাবি, ফেরার পথে আর শিশুটির পায়ের ছাপ দেখা যায়নি! তা হলে কি ফেরার সময় ওই মা তাঁর শিশুটিকে আবার কোলে তুলে নিয়েছিলেন! না, পা ফেলার ধরন তা বলছে না।
কোলে বাচ্চা থাকলে পায়ের পাতার ছাপ যতটা গভীর হয়ে পড়ে, বাচ্চা কোলে না থাকলে অত গভীর হয়ে পড়ে না। তা হলে বাচ্চাটি গেল কোথায়?
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সেই সময়ে এ গ্রহে অসংখ্য প্রজাতির ভয়ঙ্কর-ভয়ঙ্কর সব প্রাণী ছিল। হয়তো তাদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই শিশুটিকে নিরাপদ কোনও আশ্রয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার বাবা-মা।
ওই বাবা-মা শিশুটিকে হয়তো নিরাপদ কোনও জায়গায় লুকিয়ে রেখে আবার আগের জায়গায় ফিরে গিয়েছিলেন। তাই ফেরার পথে আর শিশুটির পায়ের ছাপ দেখা যায়নি!
হয়তো ওখান থেকে ফিরে আসার পরে যে কোনও কারণেই হোক, তাদের মৃত্যু হয়েছিল। তাই তাঁরা বাচ্চাটিকে আর আনতে যেতে পারেননি। আনতে গেলে ওই পথেই যেতে হতো এবং দ্বিতীয় দফায় আবার তাদের পায়ের ছাপ পাওয়া যত।
আপনার মতামত এর জন্য