.
—-“জামান ভাই! কাল আপনার সাথে রোস্টারটা একটু
এক্সচেঞ্জ করতাম। একটা জরুরি কাজ ছিল। কাল যদি একটু ইভিনিং করতেন!” শাহেদের কণ্ঠে অনুনয়।
—- ইভিনিং! ভেবেছিলাম কাল তোমার ভাইপোকে নিয়ে একটু বেড়াতে যাব। আচ্ছা, কি কাজ বলতো?
—- আসলে আমার মামাতো ভাই অনেকদিন পর জার্মানি থেকে আসছে। কাল সন্ধ্যা সাতটায় পৌঁছবার কথা। ওকে রিসিভ করতে যেতাম আর কি। না পারলে অসুবিধা নেই ভাই।
— আরে না না! যাও তোমার মর্নিং কনফার্ম। আমি তোমার ইভিনিং করে দেব।
— কি বলে যে ধন্যবাদ দেব ভাই!
— শুধু ধন্যবাদে চিড়ে ভিজবেনা মশাই। ট্রিট চাই, বুঝলে!
—- ভ্রাতৃআজ্ঞা শিরোধার্য!
বেশ প্রফুল্ল মনে কাজ করছিল শাহেদ। ও পুরনো ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করছে।
” কি খোকাবাবু! ডিউটি বদলাতে পারলে তবে?”, শ্যামাদির ডাকে সম্বিত ফিরল শাহেদের। মিস শ্যামা ঘোষ শাহেদের সবচেয়ে ফেভারিট কলিগ। খুব আদর করেন তিনি ওকে। আর শাহেদও দিদি বলতে অজ্ঞান!
পরদিন বিকেল চারটায় অফিস থেকে বেরিয়েই রিকশা হাঁকল শাহেদ।
—– এই খালি যাবে? বেইলি রোড?
—– বেইলি রোড কুন জাগায়?
—– মহিলা সমিতি।
—– দ্যারশ ট্যাকা।
—- আশি টাকা যাবে?
—- একশ দিয়েন, নামায়া দিয়া আহি।
“বেশিতো চাইনি দ্রৌপদী! কড়ে আঙুলের নখ থেকে তুলে দেওয়া একফোঁটা প্রেম” সংলাপটির সঙ্গে যেন একাত্ম হয়ে যায় শাহেদ। মুহুর্মুহু করতালির মধ্য দিয়ে শেষ হয় “পুরাণকথা” নাটকটি।
অডিটোরিয়াম ত্যাগ করবার সময় পেছন থেকে কে যেন শাহেদের হাতটা খপ করে ধরে ফেলল।
—– দিদি! আপনি?
—– এই তোমার এয়ারপোর্টে যাওয়া?
—– লক্ষ্মী দিদি! কাউকে বলবেন না প্লিজ!
—– তবে জরিমানা দিতে হবে! দোসা এক্সপ্রেসে চল।
ছোলা ভাতুরা খেতে খেতে মুখোমুখি বসে গল্প করছে দুজন।
—– নাটক ভালবাস খুব?
—– খুউব। আচ্ছা দিদি! আপনিও মঞ্চনাটক দেখেন
বুঝি অনেক?
—— এতো আমার ছাত্রজীবনের অভ্যাস। আচ্ছা, নাটক দেখবার জন্য অমন গল্প ফাঁদতে পারলে?
—— আসলে দিদি! এটি ঠিক মিথ্যে নয় বরং
কৌশলমাত্র।
—— বিস্তারিত জানতে চাই বৎস।
—— অশ্বত্থামা হত, ইতি গজ।
—— বেশ বলেছতো! বিলটা কিন্তু আমি দেব।
—— একটা সুযোগ দিন না দিদি! প্লিজ!
—– দিদির সঙ্গে দাদাগিরি!
—— ওকে বাবা সরি! মাই গ্রেট দিদি!
.
আপনার মতামতের জন্য