কাল যা হওয়ার কথা ছিল
তা হয় নি
আজ যা ভাবছি সেটাও হয়তো হবে না
এই অনিশ্চিত সময় কখনও শুধুই
হতাশার গল্প শোনায় ——–
প্রিয়জনেরা দেনা পাওনার
রেখাচিত্র টানে
শৈশবে খেলাঘর সকলেই বেঁধেছে
যৌবনে গড়েছে তাজমহল
কেউই শাজাহান হতে পারে নি
মনের সঙ্গে মনের অমিল
প্রাণের সঙ্গে দেহের
সুখপাখীটা ধরতে গিয়ে
খেলাঘরটি -ই গেছে ভেঙে
আতস কাচের তলায় নিজের মুখটাই
এখন চিনতে পারি না
বয়সের বলিরেখা লজ্জা দেয়
দিনে দিনে কত বদল হলো জীবনের
সময়ের
একতারা থেকে দোতারায়
শুধুই এখন পোড়া মনের জলছবি
ভুয়ো দর্শনের পাঁচালি
নিশ্চিন্দিপুর আর কতদূর
সেদিনের অপু তো আজ নজরবন্দী
সাদা কাগজে শুধু
বিসর্জনের ছবি আঁকে
মেঘ ও বৃষ্টির ছত্রছায়ায়
আর এক বনলতা সেনের
ঠিকানা খোঁজে l
ভালো থাকাটা বড্ড জরুরি – শম্পা সাহা
অ্যাট দ্য এন্ড অফ দ্য ডে ভাল থাকাটা জরুরি
হয়তো তুমি মর্নিং মেসেজটাই পেলে ব্রেক আপ এর
খেতে বসে যত অপছন্দের রান্না!
হয়তো ঢ্যাড়স চচ্চড়ি বা ঐ জাতীয় কিছু
অথবা কাঁটা ওয়ালা ছোট মাছ
বাবার কোলেস্টেরল বেড়েছে বড় মাছ খাওয়া বারণ
কাঁটা একটা হয়তো সারাদিনই খচখচ করবে
অফিস বেরোতে একগাদা দেরী
মেজাজ হারালে চলবে না।
ভিড় বাসে বাদুড় ঝোলা
সামনের পাদানিতে পা দিতেই সুবেশা সুন্দরীর হাই হিল
দিলো তোমার সামনের নখ মাড়িয়ে
পলিশ করা জুতোয় নোংরা ছাপ
হাসিমুখে,”স্যরি”, বললে তোমাকেও পাল্টা হাসিই ফেরৎ দিতে হবে
হয়তো কারো ঘামের গন্ধে মাথা নাক ঝাঁ ঝাঁ করছে
তুমি তো বাস থেকে ঝাঁপিয়ে নেমে পড়তে পারছো না
একটু কুম্ভক প্র্যাকটিস করো স্বাস্থ্যের ও ভালো
তোমার ও।
অফিসে ঢুকতেই বসের দাঁত কিড়মিড়
হাল্কা করে ডজ করে সামনের ডজন খানেক সুন্দরীদের ওপর চোখ বোলাও
বুকের বাঁদিক টনটন করছে তো
সকালের মেসেজটা মাঝে মাঝে ই ব্লিংক করছে চোখের সামনে
মন কে আচ্ছা করে ধমকে সুবোধ ছেলের মত সব ফাইল শেষ করে
দু এক কাপ কফির মগে দুঃখ টা গুলে কয়েক ঢোকে বুকের নীচে চালান করে দাও।
অফিস ফেরতা একটু ফরেন লিকারের দোকানে ঢুঁ মেরে
কম পক্ষে এক বোতল বাইন্ডার স্প্রাইট
ব্যস আর তোমাকে পায় কে
টুক করে ব্যাগে চালান করে বাড়িতে বাবু সোনা সেজে
চাঁদমুখ করে রুটি তরকারি নিদেন আলুভাজা বা একটা ডিমের পোচ্
এবার তোমার দুনিয়া তোমার জগৎ তুমিই বস্
দু পেগ চাপিয়ে বেশ ওয়ার্ম আপ
সকালের ব্রেক আপ মেসেজের পাল্টা মেসেজ
পছন্দ মত ভাষার ব্যবহারে সাজিয়ে নাও
যদি না ততক্ষণে ব্লক হয়ে থাকো।
এরপর নীল আলো আর তুমি
আর তোমাকে পায় কে
ভালো থাকাটা বড্ড জরুরি অ্যাট দ্য এন্ড অফ দ্য ডে।
সুখ — ছন্নছাড়া
সুখ নামে পাখিটা আজও উড়ছে আকাশে
আপন মনে, আমায় ভুলে, ভাসছে দেখি বাতাসে
মন খারাপের বিকাল বেলায় স্মৃতিরা সেথায় আসে
ফিরে ভিড় করে,
তবুও তাকে দেখে আনন্দেতে আপনার মনও যে যায় ভরে।
ফেলে আসা সময়ের পানে জীবন ফিরে যেতে চায়,
আবেগী মন আমার দেখি তার দিকে ছুটে যেতে চায়,
তারপর সহসা সে থমকে দাঁড়ায়!
অতীত হয়েছে যা, কেন তাকে বিরক্ত করা?
সে থাক না কেবলই স্মৃতিপটে বিরাজমান ও ভরা।
সেই সুখ পাখি, যে ছিল মোর অতি আপনার
একদিন দেখি, অসীম আকাশের পানে তার
নয়নের টান, পাখার ঝটপটি উরবার তরে,
ভালবাসার বেড়া ভেঙে দিলাম তারে মুক্ত করে,
জোর করে না রেখে ধরে আপনার তরে।
যখন দেখি সেই পাখি আজ আপন মনে ওড়ে,
সেই পাখিকে উড়তে দেখে কোথাও যেন ভাল লাগা মোর মনও ভরে।
অতীতের স্মৃতিরা তখন আমার বুকেও সুখের বানে জাগায়
বিষাদ ভুলে আনন্দ এসে অপূর্ব ভাবনাতে মনকে ভাসায়।
নিজেকে দিয়ে বলি, দিয়েছি তারে নতুন জীবন,
পরের সুখে স্বার্থত্যাগের আনন্দ ভরায় আমার ভুবন।
সোনা ফলানোর ডানপিটে মাঠে
আকাশ সমান
নীল চুয়ানো ক্যানভাসটা, পাশে
নড়েচড়ে বসেছে সম্মোহনী চড়ুই।
শিহরণে বাতাসের থিরিথিরি কাঁপনে জানিয়ে যায় কবিতার প্রসন্ন সুর।
ছড়ানো ছিটানো নুড়িগুলো এখনও গোধুলির কামনায় নিরাপদ হতে চায়,
পায়ের আঙ্গুলে বালুচরে হাঁটার কষ্ট তারচে বড় করুণ।
স্বমহিমার কীর্তনে সময় চলেছে দুর্বার রাখালিয়ার মতো,
যায় গড়িয়ে তুলে রাখা তক্তপোষে
সীমিত সুখের সমবন্টনের কাঙ্খিত বিষয়াদি, পুরনো বাতাসের আহলাদে ভরপুর বাবলার সুখ।

শয্যাচিতায় প্রবেশ করতে চাই
অগ্নিবলয়ের আলিঙ্গনে,
আগুনের লেলিহান চুম্বনে মথিত হোক
আমার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ।
অবশিষ্ট থাকুক
বেদনাক্লিষ্ট যন্ত্রণাদগ্ধ ছাই
অগ্নিদেব, আমায় শুদ্ধতা দাও ।।
মরচে ধরা আস্তানায় ইজেলের পুরোন ক্যানভাসে
কিছু ইচ্ছে এখনো খেলা করে রয়ে যাওয়া রঙে,
ফেলাছড়া জিনিসের অপ্রয়োজনের মরীচিকায়
ওঠে কিছু মরুঝড়, মাটির ভেসে যাওয়া বালির গ্রাসে,
এক চিলতে ঠিকানা হারানো রোদ্দুর খেলা করে,
সাবধানী সংসারী মন ঢেকেছিল যা পুরোন অনিচ্ছায়,
হঠাৎ ঝাপটায় লাভা স্রোত বয় ভিসুভিয়াসের জাগরণে,
পম্পেইয়ের ছড়ানো ছাইতে নতুন স্ফুলিঙ্গ খোঁজা,
নিয়মের জালে বিনা খেদের সাজানো ড্রয়িংরুমে
নিঝুম রাত্রি নামে, স্বপ্ন স্বপ্ন নাইট ল্যাম্পে বিনা স্বপ্নের
ঘুমে হানাদার দুঃস্বপ্নের মাঝে কোথাও রয়ে যায় আশা,
চুরুটের ছাইয়ে পুরোন বিড়ির গন্ধ লেগে আছে বিপ্লবী
ঝুলিতে, লাখো স্বপ্নেরা দোল খাচ্ছে শহীদ বেদীতে
কিংবা গৃহী সুখে, ছাদের কার্নিশের জিম্মায় পায়রার
আবাসে চিলেকোঠার স্বপ্নের ঠিকানা রাখা আছে,
নরম তোয়ালে আর সুগন্ধি সাবানের ঘ্রাণে মাথা তোলে
পুরোনইচ্ছের মুষ্টিবন্ধনে হারানোর প্রয়াসে মানবশৃঙ্খলে।

কবর থেকে উঠে আসছে মৃতদেহ,
চিতা থেকে উঠে আসছে মৃতদেহ;
তারা জেনে গেছে ইহলোকের সব
পাপী জীবিতরা সুখের অসুখে মৃত।
মৃতদেহগুলি বাদ্যযন্ত্রে সুর তুলেছে…
কিছুক্ষণের মধ্যেই জলসা শুরু হবে,
সঙ্গীতশিল্পীরা এসে গেছে,এসে গেছে
সমস্ত স্বার্থপর,পরশ্রীকাতর পরজীবী।
কবরের সব ফুল চুরি গেছে,শ্মশানের
গাছগুলির পাতা ঝরে গেছে,মহাকাল
এবার কুশীলবদের মাঠে নামিয়ে দিয়ে
মৃতদের সাথে জীবিতদের যুদ্ধ বাধাবে।
খুব কষ্ট করে হলেও শেষ বিকেলে
তোমার সাথে একটি কথাই হলো
গোধুলি অধ্যায় পাঠ করো,পাঠ করো
সুর্য যাবে রাতের বাসব ঘরে।
সুর্যোদয়কাল খেয়ে গেছে আলসেমির মুখ।
অবশেষ ঘুম থেকে জেগে ওঠে।
পূর্বের সেট মিলাতে যায় ভগ্নাংশের জমিনে
যে জমিনে সাদা মাটির শরীরে চাষ করে গৌরব উপন্যাসের আঠারো অধ্যায়। আর ফলার কামরে বিক্ষতের যাপন দিন পালন করে। ভাবনা এখানে। আমরা এও জানি ইচ্ছা করে কেউ নষ্ট ফল
কিনে নিবে না বাজারি পলিথিন ব্যাগে ।
বিকেলের সেই একটি কথাই —আমাকে তুমি
দেখবে আপদমস্তক। শত্রু আর শণিতের —এই কী
সেই রূপান্তর দেহের পূর্বের মানুষটি।
অদ্ভুত – আশিক রহমান রাহাত

তুমি তুমিই থাকো –মেহের আমজাদ
সুন্দর চাঁদের আড়ালেও কলঙ্ক থাকে
সুবাসিত গোলাপের মাঝেও কাঁটা থাকে
তাই তোমকে চাঁদ অথবা গোলাপের সাথে
উপমা দিয়ে কলঙ্কিত করতে চাইনা।
তমি চাঁদ ভালোবাসো
গোলাপের সুবাস পেয়ে মুগ্ধ হয়ে যাও
আমি ভয় পাই-
বিশ্বাস করো আমি তখন আতঙ্কিত হয়ে যায়
তুমি চাঁদ হইওনা গোলাপ হতে যেওনা
তুমি তুমিই থাকো
আমার হৃদয়ের ক্যানভ্যাসে।
গ্রহ তারা – দেবদাস কুণ্ডু
তোমার শরীর থেকে উঠে আসে মৎস্যকন্যা
তোমার বুক চিরে মেঘেরা দেয় ডাক
তোমারই গলায় হারান বাঁশির সুর