” অনেক তো সামাজিক, প্রেম, খেলার গল্প হল, এবার একটা রহস্য গল্প লেখ। মানুষ খুব পছন্দ করে ।” হিমু বলল অনাদিকে ।
” সে তো লেখাই যায়। মানুষের জীবন, এই দুনিয়াটা তো পুরোটাই রহস্য। কখন যে কী হয় ,কী জীবনে কী দুনিয়ায় আগে থেকে তো কিছু বোঝাই যায় না । পুরোটাই রহস্যে ঢাকা। পরতে পরতে টানটান উত্তেজনা !” অনাদি রোমাঞ্চিত হয়ে বলল।
” দেখেছিস তোর সব ব্যাপারেই ফাজলামো। আমি অত কঠিন কিছু বলিনি। সাধারণ রহস্য গল্প লিখতে বলেছি।” হিমু বিরক্ত হল।
” আহা, রাগ করছিস কেন ? তুই তো ঠিক কথাই বলেছিস। অজানাকে জানার ইচ্ছা তো মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা। আর তাতে যদি গল্পের মশলা থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই। তবে আমি কী ভাবছি জানিস, তুই যখন বললিই, আমি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে একটা রহস্য গল্প লিখব ।” অনাদি বলল।
” নেতাজীকে নিয়ে রহস্য গল্প! ওনার মৃত্যু নিয়ে রহস্য আছে ঠিকই , কিন্তু ওনাকে নিয়ে কী রহস্য গল্প লিখবি?” অবাক হয়ে হিমু জানতে চাইল ।
হিমুর কাঁধে হাত রেখে, গম্ভীরভাবে অনাদি বলল ” ঠিক বলেছিস। ওনাকে নিয়ে রহস্য গল্প নয়, ওনার জীবনের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করব। এখন আমরা যখন সামান্য একটা চাকরি ছাড়তে ভয় পাই, সারা দেশে কে মরল কে পুড়ল সে খবর রাখি না , যদি নিজের স্বাচ্ছন্দ্য কমে যায় এই ভেবে, সেখানে নেতাজী কোন মানসিক শক্তিতে সিভিল সার্ভিস ছেড়ে , নিজের সুখ- স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়ে, শুধুমাত্র দেশের কথা ভেবে সব কষ্টকে হাসিমুখে স্বীকার করে নিয়েছিলেন, সেই রহস্যের একআনাও যদি বুঝতে পারি আর নিজের জীবনে লাগাতে পারি, এ জীবন ধন্য হয়ে যাবে রে । “
