আমার বিক্ষণ – রণেশ রায়
স্রোতস্বিনী নদীতে খেয়া বেয়ে
পথিক আমি পথ চলি
সমুদ্র মোহনার দিশারী আমি
আমি ভবিষ্যতের অনুসারী
প্রগতির পথের পথিক
পরিবর্তনের দিশা খুঁজে ফিরি
বর্তমানে আমি এ জগৎ দেখি
বুঝতে চাই দ্বন্দ্ব ঐক্যের বিরহ মিলন
চিনতে চাই নিজেকে
তাও আমি অতিতচারী
অতীত বিক্ষণ আমার
প্রগতির নিয়মে সময়ের প্রবাহ ধরে
অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ হাতে হাত ধরে
ভবিষ্যৎ বার্তা বয়ে আনে বর্তমানে
অতীতের গর্ভে বর্তমানের বিদায়
স্মৃতির আশ্রয়ে তার বাস
স্মৃতির কানন কুসুমের সৌরভে
সুরভিত মর্তমান
ভবিষ্যতের দিশা অতীত বর্তমানের সঙ্গমে
অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের মোহনা
প্রজন্মের মিলন মেলা।
ফসলের গান – মহীতোষ গায়েন
পথ চলতে চলতে শিখে যাবে
কিভাবে বেঁচে থাকতে হয়,সব
রাস্তায় অন্ধকার নেমে এলেও
দেখবে আলোকিত অন্য রাস্তা।
সম্পর্কের অলি গলিতে আগাছা
জন্মালে তুমি জেনে যাবে কারণ,
বুঝে যাবে রহস্য কোথায় লুকিয়ে
কোথায় উৎপাদিত চক্রান্তের বিষ।
আঘাত পেতে পেতে তোমার সমস্ত
শরীর উর্বর হবে,তোমার জমিতেই
ফলবে উৎকৃষ্ট ফসল,নবান্ন উৎসবে
হৃদয়ের মাঠে বাজবে মুক্তির গান।
কেন বুঝিনি? – শম্পা সাহা
তোমাকে দেবতা ভেবে পূজো করতে গিয়ে
ফুল বেল পাতায় সাজাতে
যখন বেড়িয়ে এলো ক্লেদাক্ত খড় মাটি
বড্ড আঁশটে সম্পর্কে জড়িয়ে বড় বেশি শরীর শরীর
না শরীরের দোষ নেই কোনো সে তো জাগবেই
মিটিয়ে নিতে চাইবে তার খিদে
তা বলে নিজের ঘরে চুরি করতে হবে
মানলাম সেও না হয় পেতে ছিল শরীরখানা
তার ও ছিল খিদে
আধুনিকতার দোহাই দিয়ে বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে
কু যুক্তির দোহাই দিয়ে পার পাবে না কখনো
যা ভুল মানুষের ইতিহাসে
তা ভুল ই
যৌনতায় দোষ নেই কোনো
সে তো স্বাভাবিক
তবু কিছু কিছু সম্পর্ক নিরাপত্তা চায়
পবিত্রতা চায়
চায় ধূপ ধুনোর গন্ধ
সেখানে শরীরী উষ্ণ তরল বড় পুঁতিগন্ধময়
রাগ হয়, বড় রাগ হয় নিজের উপর
যে ফুল দেবতাকে দিয়েছিলাম
তাতে কালির ছিটে লাগানোর কি বড় দরকার ছিল?
না হয় সাদাই থাকতো পাপড়ি গুলো
মুষড়ে শুকিয়ে যেতো তবু
তবু শুকনো ফুলেও থাকে পবিত্রতা
থাকে ঐশ্বরিক সুগন্ধ
আজ পাই শুধু দলিত গলিত পাপড়িতে শরীরগন্ধী নর্দমার পাঁক
না তোমাকে নয় ঘেন্না নিজেকে
কেন চোখ থাকতে দেবতা অসুরে ফারাক বুঝিনি
কেন বুঝিনি?
নিষিদ্ধ গন্ধম – মেহের আমজাদ
প্রচন্ড বিশ্বাসে হাতে হাত রাখলাম
আর তুমি খাওয়ালে নিষিদ্ধ গন্ধম!
অতঃপর প্রেম-ভালোবাসা মায়া-মমতায় জড়িয়ে
নিয়ে এলে এই নির্বাসনে
তাই হা-পিতেস করে আর লাভ কি?
যা হারাবার সেটাতো হারিয়েছি
নিষিদ্ধ গন্ধম ছুঁয়ে
আর কি ফেরাবার আছে?
শেষ মীনতি – এম. জাকারিয়া আহমেদ
কেমনে রাখিগো সখি
আঁখে বারি চাপিয়া ?
তব কথা মনে হলে,
অশ্রু ঝরে ঝাপিয়া !
যতই ভুলার চেষ্টা করি
নয়ন ততোই কাঁদে,
যতই ভাবি হারিয়ে যাবো
নিকট ততোই বাঁধে !
তোমার ঘৃণার পাত্র আমি
যখন শুনি কানে,
কতোটা যে কষ্ট হয়
শুধু অন্তর্জামী জানে !
ছাড়তে তখন ইচ্ছে হয়
এই ধরণী মাঝার,
মরতে গেলে মনে হয়ে যায়
নরকে পুড়া সাজার !
আবার তখন ফিরে আসি
করুণ সুরে বাজাই বাঁশি,
বাঁশির সুরে কাঁদে তখন
বুক পিঞ্জরের মন মাসি !
মন মাসির ঘুমড়ে কাঁদন
হৃদ পিঞ্জরে রক্ত ঝরায়,
কি হলো তোর বাঁশরীয়া ?
শুধায় আমায় সন্ধ্যা তারায় !
উত্তর আমার আছে জানা
কেমনে বলি তোমায় ?
যাকে আমি ভালোবাসি
ঘৃণা করে সে আমায় !
থেকো তুমি সাক্ষি তারা
আজকে আমি সঙ্গি হারা,
বইলো তারে সকল কথা
হবো যেদিন বাঁধনহারা !
মুক্তি তোমায় দিয়ে গেলাম
ওগো আমার পাখি,
নিয়ে গেলাম দুঃখের সাথে
অশ্রুভরা আঁখি !
শেষ মীনতি বন্ধু তোমায়
দুঃখ হলে আইসো ?
আমার লাশের পাশে তুমি
শুধু একটি বার বইসো !!!