” যাই বল অবনী, এই মোবাইল , স্মার্টফোন এসব কিছু এসে কিন্তু জীবনটাকে অন্যরকম করে দিল। আগে কত কথা হত, আড্ডা হত, লোকের বাড়িতে লোকের যাওয়া আসা হত, এখন সবকিছু সবাই মোবাইলেই সারছে। আর ইয়ং জেনারেশন তো ওর মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে বসে আছে রাতদিন।” সকালবেলা বাজারে এসে ছোটবেলার বন্ধু অবনীকে দেখে বলল সদ্য বাহান্ন বছরে পা দেওয়া হিমাংশু।
” দেখ হিমাংশু, তুই কথাটা পুরোপুরি ভুল বলিসনি। মোবাইল এখন আমাদের জীবনে অনেকটাই কন্ট্রোল করে। লাইফস্টাইল চেঞ্জ করে দিয়েছে। আড্ডা মারার সময়ও সবাই মোবাইলের দিকে চোখ রাখে। তবে সবকিছুই তো আর খারাপ নয়, মোবাইলেরও ভালো দিক আছে।” হিমাংশু বোঝানোর চেষ্টা করল ।
” সে তো নিশ্চয়ই। আমার বউয়ের হঠাৎ বেগুন পোড়া খাবার ইচ্ছা হল। যতক্ষণ বাড়িতে ছিলাম মনে পড়েনি। মোবাইলে ফোন করে জানিয়ে দিল। বেগুন নিলাম। যোগাযোগের ব্যাপারটা দারুন হয়েছে। কিন্তু এর খারাপ দিকটা এত বেশি আমার চোখে পড়ে যে, ভালোর চেয়ে মন্দটাই মনে থাকে।” অবনী উত্তর দিল ।
কথা বলতে বলতে বাজারের বাইরে চায়ের দোকানে গিয়ে দাঁড়াল ওরা। চা নিল। চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে হিমাংশু বলল ” তোর মনে আছে, স্কুলে পড়ার সময় আমাদের একটা রচনা মাঝেমাঝেই লিখতে দিত, বিজ্ঞান আমাদের জীবনে অভিশাপ না আশীর্বাদ, এটাও তেমন। তবে করোনা অতিমারীতে আমরা সবাই যেরকম ঘরবন্দি হয়ে ছিলাম , যদি মোবাইল, স্মার্টফোন কিছুই আবিষ্কার না হত আমাদের জীবনে আরও সমস্যা বাড়ত। এটাকে অনেকটা ছুরির মতো ভাবতে পারিস। ছুরি দিয়ে তুই মানুষের গলা কাটবি নাকি সবজি কাটবি পুরোটাই তোর উপর নির্ভর করছে। ছুরির কোনো দোষ নেই রে।”